সিরাজগঞ্জ-৫ (চৌহালী-বেলকুচি) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও তার মেয়ের জামাতা নুরুল ইসলাম সাজেদুল। তবে বাছাইয়ে এসে বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম সাজেদুল। শতকরা এক ভাগ ভোটারে স্বাক্ষর গরমিল থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে সিরাজগঞ্জ-৪, ৫ ও ৬ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ ঘোষণা দেন। এ সময় সিরাজগঞ্জ-৫ ও ৬ আসন থেকে আরও দুজনের ১% ভোটারের স্বাক্ষর গরমিল থাকায় তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তবে মনোনয়ন বৈধ দাবি করে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নুরুল ইসলাম সাজেদুল বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের যে স্বাক্ষর জমা দিয়েছি তা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে নেওয়া। তারপরও স্বাক্ষরে গরমিল ধরে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবো।

নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে একদিকে বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের জামাতা নুরুল ইসলাম সাজেদুল। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
নূরুল ইসলাম সাজেদুল ২০১৯ সালের ১০ মার্চ দেশের প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর সিরাজুল ইসলাম। গত ২৩ নভেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

অন্যদিকে, আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ১৯৯৬-২০০১ সাল ও ২০০৮-২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি মহাজোট সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও। এই আসন থেকে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল।

প্রসঙ্গত, এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ৩৮১ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮০ জন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জয়ী হন নৌকার প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। এরপর ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল মমিন মন্ডল। নির্বাচনে মমিন মন্ডল (নৌকা) পেয়েছিলেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬১ ভোট ও মো. আমিরুল ইসলাম খান (ধানের শীষ) পান ২৮ হাজার ৩১৭ ভোট।