সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জননন্দিত জনপ্রতিনিধি ও
আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মনিরুজ্জামান পান্না। সেবাপ্রদানের দায়বদ্ধতা ও সংগঠক হিসেবে প্রতিশ্রুতিশীলতায় উল্লাপাড়ার তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মিসহ উপজেলাটির আপামর জনসাধারণের আস্থা ও প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছেন সাবেক এই ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান পান্না।
একাধিক ইউনিয়নে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনকালে সংগঠনের শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের জনপ্রতিনিধিদের বিজয়ী করে আনার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা ও বিচক্ষনতা প্রমান করা সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের অতি আস্থাভাজন ত্যাগি-নির্যাতিত তরুণ জনপ্রতিনিধি মনিরুজ্জামান পান্না উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় উল্লাসিত উপজেলা প্রশাসন, সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মিরা।
তরুণ এই জনপ্রতিনিধি নিয়মিত উপজেলা পরিষদে নিজ অফিসে দায়িত্ব পালনকালে জনপ্রতিনিধি, আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মি ও জনসাধারণের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আন্তরিক ভূমিকা রাখায় ইতিমধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কমিটির সদস্য হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন উপজেলাটির সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায়।
১৯৭৮ সালে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়পাঙ্গাসি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন মো: মনিরুজ্জামান পান্না। সরকারি চাকরিজীবি পিতা ইয়াছিন আলী ও মাতা গৃহীনি মনোয়ারা বেগমের একমাত্র সন্তান পান্না পড়ালেখা শুরু করেন ঝিকিড়া বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে মাধ্যমিকেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে।
১৯৯৩ সালে এসএসসি’তে তিনটি লেটারসহ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ন হওয়া এই মেধাবী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন সরকারি আকবর আলী কলেজে। স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ধাসিত ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে আদর্শিত মেধাবী ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান পান্না সরকারি আকবর আলী কলেজে ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠিত ছাত্র-ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে এজিএস পদে মনোনয়ন প্রত্যাশি হন। কিন্তু মনোনয়ন প্রাপ্তিতে ব্যার্থ হন। সে বছরই এইচএসসি পাস করেন মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগ পেয়ে। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেও সক্রিয় ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে অনার্স-মাষ্টার্স সম্পন্ন করেই ফিরে আসেন প্রিয় উল্লাপাড়ায়।
২০০১ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালিন সময়ে উল্লাপাড়ায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক মামলায় আসামি করা হয় মনিরুজ্জামান পান্নাকে। সেই নির্বাচনে কারসাজির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ফল ঘোষনার দিনেই হামলা চালান ছাত্রলীগ নেতা মনিরুজ্জামান পান্নার বাড়িতে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। একমাত্র সন্তান পান্না ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার অপরাধে তার সরকারি চাকরিজীবি পিতাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। বিধিবহির্ভুতভাবে তাকে ছয় মাসে তিনবার বদলি করা হয় বিভিন্ন উপজেলায়।
ছাত্রলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন জড়িত থাকা এই ছাত্রনেতা ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়কালে সকল প্রতিকুলতাকে পাশ কাটিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ন-আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ছাত্রলীগের শক্তিশালি সংগঠন তৈরি করে উপজেলা ছাত্রলীগের বণাঢ্য সম্মেলন আয়োজন করেন। ঐ সময়ে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা থাকার পরেও বয়স বেশি হওয়ার কারনে নিজে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক প্রার্থী হতে পারেননি। কিন্তু পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব কষে থেমে থাকেননি কিছুতেই। অভিমান ভেঙ্গে আবারো রাজপথ প্রকম্পিত করেছেন জয়বাংলার শ্লোগানে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নানা কর্মসূচি সফল করতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করা রাজপথের অকুতোভয় সৈনিক মনিরুজ্জামান পান্নার উপরে ২০০৬ সালের ১৭’ই আগস্ট বর্বর ও পৈশাচিক হামলা চালায় বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। নির্মমভাবে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে একটি পা ভেঙ্গে দেয়া হয় মেধাবী এই ছাত্রনেতার। দাীর্ঘদিন সিরাজগঞ্জ সেন্ট্রাল হসপিটালে চিকিৎসা করাতে হয় তার।
অসুস্থ অবস্থায়ই ২০০৬ সালে উল্লাপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নবগঠিত কমিটির যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মনিরুজ্জামান পান্না। এরপর ২০১৮ সালে উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ঐ বছরেই অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার বড়পাঙ্গাসি ও মোহনপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সমন্বয়কারি হিসেবে দায়িত্ব পান পান্না। ঐ দুটি ইউনিয়নে রাতদিন পরিশ্রম করে নৌকার পক্ষে নেতা-কর্মিসহ জনসাধারণকে একাট্টা করে সর্বোচ্চ ভোট আদায় করেন।
সাংগঠনিক দক্ষতা, পরিশ্রম, সেবার মানষিকতা ও রাজনৈতিক প্রঙ্গার ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসনের জনপ্রিয় জাতীয় সংসদ সদস্য জননেতা তানভীর ইমামের আস্থা অর্জন করা মনিরুজ্জামান পান্না ২০১৯ সালে উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মনোনীত হন সর্বোচ্চ ভোটে এবং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিকুল ইসলাম স্বেচ্ছায় স্বীয়পদ থেকে পদত্যাগ করায় উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উপজেলা পরিষদ (কার্যক্রম বাস্তবায়ন) বিধিমালা, ২০১০ (৩) ধারা অনুযায়ী নতুন চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্যানেল চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান পান্নাকে উপজেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্বসহ আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করে গত রোববার (১৯ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মাসুরা বেগম।
২০২১ সালে অনুষ্ঠিত উল্লাপাড়া পৌর নির্বাচনেও পৌরসভার ২ ও ৫নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয় সদালাপি, কর্মীবান্ধব সংগঠক মনিরুজ্জামান পান্নাকে। দুটি ওয়ার্ডে নৌকা প্রতিক বিজয়ী হবার পাশাপাশি আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
দীর্ঘদিন যাবৎ দলীয় সমন্বয়কারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের। বিগত ইউপি নির্বাচনে শত প্রতিকুলতার মাঝেও তৃণমূূলের কর্মিদের ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে ঐ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন তিনি।
প্রত্যন্ত বড়পাঙ্গাসি ইউনিয়নের জাতীয় তরুণ সংঘ ডিগ্রি কলেজ ম্যানেজিং কমিটির বিদুৎসাহি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে ঐ প্রতিষ্ঠানের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও দাদপুর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির এ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এরআগে গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মনিরুজ্জামান পান্না।
শিল্প-সাহিত্য সচেতন মনিরুজ্জামান পান্না উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সদস্য। উল্লাপাড়া পৌর এলাকার ঘোষগাতি বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের ব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও কাওয়াক ইদগাহ ও কবরস্থান কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে একসন্তানের জনক মনিরুজ্জামান পান্না একজন সফল ব্যাবসায়ি।
সকল স্থানেই নিজ দায়িত্ব পালনে একাগ্র, সক্রিয়তা, পরিশ্রম, সততা ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার ফলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান তরুণ জননেতা মনিরুজ্জামান পান্না।
উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ বিষয়ে মোঃ মনিরুজ্জামান পান্না বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়েছিলাম। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উপমহাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাঁর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। সেই উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে নেই আমার প্রিয় উপজেলা উল্লাপাড়া। এ আসনের জননন্দিত জননেতা জাতীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের দিকনির্দেশনায় এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে বদলে গেছে উপজেলাটি। গত সাড়ে ৪ বছরে স্থানীয় এমপির স্নেহছায়ায় ও সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বদলে গেছে উল্লাপাড়া উপজেলারচিত্র। আশা করি এধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।
মোঃ মনিরুজ্জামান পান্না আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা সরকারের কোন বিকল্প নেই। তার এ অব্যাহত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেন উল্লাপাড়া উপজেলায় সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারি এজন্য তিনি স্থানীয় সরকার (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেছেন।