সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সুরভী খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামী বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কনস্টেবল মো. মনিরুল ইসলামকে (৩০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ এ রায় দেন। এ সময় আদালতে আসামি উপস্থিত ছিলেন। দন্ডপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম (২৩) জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার চর কালীগঞ্জ গ্রামের সাহেব আলী প্রামনিকের ছেলে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এর আদালতের এপিপি মশিউর রহমান চৌধুরী এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার রামকান্তপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে মোছা. সুরভী খাতুনের বিয়ে হয় পুলিশ কনস্টেবল মনিরুলের সঙ্গে। কিন্তু সুরভীকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারেননি মনিরুল। তার সঙ্গে খারাপ আচরণ ও শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন তিনি। এর মধ্যে সে অন্য এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ অবস্থায় মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে বলতো তোকে আমার পছন্দ হয়নি। তুই বিষপানে আত্নহত্যা কর। আমার পথটা পরিস্কার করে দে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট ছুটিতে বাড়িতে আসেন তিনি। ওইদিন রাত ৮টার দিকে স্ত্রী সুরভীকে বাবার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরদিন দুপুরে রামকান্তপুর গ্রামে একটি ডোবায় সুরভীর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন সুরভীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। মনিরুল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এরপরই আসামি কনস্টেবলের চাকরি থেকে বরখাস্ত হন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি চার্জ গঠন হয়। প্রসিকিউশন আদালতে ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার মনিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন বিচারক।