মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গ্রীস্মকালীন খেলাকে কেন্দ্র করে জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মারধরের শিকার হয়েছেন সিংগাইর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে। এ ঘটনার প্রতিবাদে হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের জয়মন্টপ বাসস্ট্যান্ডে ঘন্টা-ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের মুল ফটকের সামনে আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্লোগানের পাশাপাশি টায়ার জ্বালিয়ে বিচারের দাবী জানান। এতে ওই সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হলে দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রী সাধারণ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। দুপুর ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সানজিদা জিয়াসমিন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।

ভুক্তভোগী জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিংগাইর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গ্রীস্মকালীন খেলা কাবাডি ও হ্যান্ডবল প্রতিযোগীতা শেষে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী নাদিমের নেতৃত্ত্বে ১০-১২ জন জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান কাইয়ুমসহ আরো কয়েকজনকে বেধড়ক মারপিট করে। তাদের রক্ষা করতে এসে দুই শিক্ষক মনিরুজ্জামান ও আব্দুস সালামও মারধরের শিকার হন। এ ঘটনার বিচারের দাবীতে জয়মন্টপ স্কুলের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে।

জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু রাধেশ্যাম সাহা বলেন, ইউএনও স্যার নিষেধ করা সত্ত্বেও উপজেলা সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান খাঁন ও সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্রাম হোসাইনের কথায় শিক্ষার্থীদের আমি প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণের জন্য পাঠাই। সিংগাইর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরাজিত হওয়ায় আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর বেধরক মারপিট করে। এতে দু শিক্ষকসহ ৪-৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।

সিংগাইর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আক্রাম হোসাইন বলেন, জয়মমন্টপ স্কুলের সাথে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাবাডি ও হ্যান্ডবল খেলা ছিল। খেলা শেষে স্কুল ক্যাম্পাসের বাইরে মারপিটের ঘটনা ঘটলেও কে বা কারা মারধর করেছে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, আমি একটি দুর্ঘটনাজনিত কারণে খেলায় উপস্থিত থাকতে পারিনি। মারধরের ঘটনা শুনেছি।

সিংগাইর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মারধরের ঘটনা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, বড় একটি অনুষ্ঠান থাকায় আমি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় খেলাটি স্থগিত রাখতে বলে-ছিলাম। যারা খেলাটি চালিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।