সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসন নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু। শাহজাদপুর সহকারী রিটার্নিং অফিসে গত বৃহস্পতিবার তিনি মনোনয়ন জমা দেন।

বর্তমান এমপি অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতার ভাই নৌকার প্রার্থী চয়ন ইসলামও মনোনয়ন জমা দেন। জাতীয় পার্টির মোক্তার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির তারিকুল ইসলাম, জাসদের মো. মোজাম্মেল হক, জাকের পার্টির মো. রেজাউল করিম বিপ্লব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) মোহাম্মদ শামীম, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মো. রেজাউর রশীদ খান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) কাজী আলামীনও এদিন মনোনয়ন জমা দেন।

নৌকার প্রার্থী শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চয়ন ইসলাম বলেন, ‘মেরিনা জাহান কবিতা আপা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সমকাল সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার চার্জশিটে প্রধান অভিযুক্ত হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে প্রায় সাত বছর আগেই মিরু বহিষ্কৃত হন। এবারও তাকে বিশেষ মহলের তদবিরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য করা হয়। গণমাধ্যমকর্মীদের তৎপরতায় মিরুকে ওই পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। সাংবাদিক হত্যায় অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন। মিরু স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও আশা করি তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। ইনশাল্লাহ নৌকার জয় হবে সুনিশ্চিত।’

শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রায় সাত বছর আগে খুন হন সাংবাদিক শিমুল। মিরুকে প্রধান আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এখনো হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়নি। উপরন্তু খুনিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসায় বিচার প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। প্রধান আসামি এমপি হলে সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী-স্বজনরা বিচারপ্রাপ্তিতে বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ বাধে। সাংবাদিক শিমুল পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে সাবেক মেয়র মিরুর ছোড়া শটগানের গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। হত্যার ঘটনায় মিরুসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন। পুলিশ মিরুসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে হত্যার প্রধান আসামি মিরু উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন।