কেরানীগঞ্জের আমবাগিচা খালপাড় এলাকায় ভোররাতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন নবাবগঞ্জের সবজি বিক্রেতা মো. সুকুর (৪২)। মূলত মাদকের টাকার জন্য ছিনতাই করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে সুকুরকে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় জড়িত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ইমন (২৫), রুবেল (৩২), মো. দিপু (২২), মো. মন্টু (২০) ও মো. হানিফ (২৮)। গত ২৪ ঘণ্টায় টানা অভিযান চালিয়ে কেরানীগঞ্জ, ডিএমপি ও রাজশাহী থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচগিয়ার ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নুরে আলম, কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজামান।

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃতরা সবাই মাদকসেবী। মাদকের টাকার জোগাড় করতে এরা বিভিন্ন সময় ছিনতাই করে থাকে। দিনের বেলা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। রাতের বেলা নির্জন স্থান বা সড়কে এরা ছিনতাই করে থাকে। ছিনতাই করার সময় এদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন সবজি বিক্রেতা সুকুর।

কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর জানান, নিহত সুকুরের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার চর মধুচরিয়া আগলা এলাকায়। তিনি এলাকায় সবজি বিক্রি করে সংসার নির্বাহ করেন। ১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে শ্বশুরবাড়ি সিরাদিখান থেকে রাজধানীর শ্যামবাজারে আলু ও পেঁয়াজ কেনার জন্য রওনা হন। সিএনজি-যোগে এসে নামেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীতে।

এরপর রিকশা নিয়ে আমবাগিচা খালপাড় হয়ে বুড়িগঙ্গার তীরে যাওয়ার সময় গদু মাস্তানের মাজারের সামনে রিকশার গতিরোধ করে ছিনতাইকারী ইমন ও রুবেল। দিপু, মন্টু, হানিফ ও আরও একজন রাস্তা পাহারা দিচ্ছিল যাতে কোনো লোক দেখে না ফেলে। এ সময় ইমন সুকুরকে সুইচগিয়ার দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে তার কাছে থাকা সবজি কেনার ৩০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজামান জানান, সুকুর হত্যাকাণ্ডে ৬ জন জড়িত ছিলেন। ৫ জনকে ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকি এক আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক চুরি ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।

মৃত সুকুরের পিতা ওয়াজউদ্দিন বলেন, সুকুরের ছোট একটি সন্তান রয়েছে। এছাড়াও তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ঘটনার রাতে সুকুর শ্বশুরবাড়ি সিরাজদিখানে ছিল। ভোরে আলু ও পেঁয়াজ কেনার জন্য শ্যাম-বাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়ে খুনের শিকার হয়। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা দ্রুত খুনিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। যারা আমার বুক খালি করেছে, আমার নাতিদের পিতৃহারা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।