বিশ্বে যখন মৃত্যুর মিছিল তখন করোনায় বাংলাদেশেও দিনকে দিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে যারা নিজে মাস্ক পরতে ও খুলতে পারবে না তারা ছাড়া সবারই মাস্ক পরতে হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

 

বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

এ সময় প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস্ক একটি বড় হাতিয়ার। তাই সবার এখন মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছে যাওয়ার আগে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত বলেও পরামর্শ দেন তিনি।

বিশ্বে যখন মৃত্যু মিছিল তখন করোনায় বাংলাদেশেও দিনকে দিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৭৮১ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো ২ হাজার ৪২৩ জন। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন। ৫০টি পরীক্ষাগারে এসব পরীক্ষা করা হয়। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২, ৬৯৪টি।

বৃহস্পতিবারের হেলথ বুলেটিনে ৫০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে নাসিমা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৩ হাজার ৭৮৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৬৯৪টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৫৮ হাজার ২৭৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরো দুই হাজার ৪২৩ জনের দেহে। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরো ৩৫ জনের। এদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ৫৭১ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ১৬১ জনে।

নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ২৯ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভা‌গে নয়জন, সিলেট বিভাগে দুজন এবং রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে একজন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২২ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১২ জন বাড়িতে এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। বয়সের দিক থেকে ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৪ জন, ষাটোর্ধ্ব ১১ জন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৬ লাখ ছুঁই ছুঁই। মারা গেছেন তিন লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ৩১ লাখ ৮১ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে