এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হতে চান সিরাজগঞ্জে জেলার চারটি পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সংসদে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়ানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
মেয়র থেকে এমপি হতে চাওয়া নেতারা হলেন, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসন থেকে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার টানা দুবার নির্বাচিত মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে উল্লাপাড়ার পৌরসভার টানা দুবারের নির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা এবং সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে শাহজাদপুর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির আক্তার খান তরু লোদী।
সিরাজগঞ্জ শহরের অন্যতম ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরবর্তী সময়ে সহসভাপতি মনোনীত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। পরপর দুবার পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করছি। গেল দুটি পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করেছি। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন পেলে পৌর নির্বাচনের মতো সংসদ নির্বাচনেও এ আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দেব।
উল্লাপাড়া উপজেলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি করার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন এসএম নজরুল ইসলাম। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। গত দুই মেয়াদে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র নির্বাচিত হন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে তিনি গত তিন বছর ধরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজ উদ্যোগে তিনি উপজেলার দেড় শতাধিক কবরস্থান আলোকিত করেছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আস্থা অর্জনের প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।
মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, গত তিন বছর ধরে আমি নির্বাচনী মাঠে রয়েছে। উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রাম ঘুরেছি। বিপুল সাড়া পেয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে এই আসনে মনোনয়ন দেন বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাব।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগের সাবেক আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা বেলকুচি পৌরসভার গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনের সময় তাকে বহিস্কার করা হলেও পরবর্তীতে দলীয় সভানেত্রীর সাধারণ ক্ষমায় আবারও দলে ফিরেছেন তিনি। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বেলকুচি ও চৌহালী এলাকায় পথসভা, গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন তরুণ এই মেয়র।
সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, অবহেলিত বেলকুচি-চৌহালীর উন্নয়নের স্বার্থেই আমি প্রার্থী হয়েছি। সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এ আসনের বর্তমান এমপি কোন উন্নয়ন করেননি। তিনি সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ কারণে আমি নির্বাচনী মাঠে নেমে নেতাকর্মী ও জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে নৌকা প্রতিক দিলে বিজয় সুনিশ্চিত। বিজয়ী হয়ে এলাকার উন্নয়নে নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করবো।
শাহজাদপুরের রাজনীতিতে কখনো নাম শোনা না গেলেও হঠাৎ করেই আবির্ভাব ঘরে মণির আক্তার খান তরু লোদীর। বিগত পৌর নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতিকে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নিজেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ঘোষণা করে দিনরাত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার এই আত্মীয়। তরু লোদীর মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আপন মামাতো বোন। সেই হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্পর্কে খালাতো বোন।
মনির আক্তার খান তরু লোদি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করি। টিকিট পাবো এটাই শতভাগ আশা করি। তারপর জননেত্রীর উপর ভরসা। যদি তিনি মনোনয়ন দেন শাহজাদপুরবাসী বিপুল ভোটে জয়ী করবে।