আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সংসদে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়ানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমর্থন পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। সবদিকে বিবেচনা করলে মনোনয়ন দৌড়ে লিটনই এগিয়ে রয়েছেন।

শনিবার (২১ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেন ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন। এ সময় তার সঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন বলেন, নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য আমি শতভাগ আশাবাদী। দলের পাশাপাশি দীর্ঘ ১৫ বছর এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগকে তৃণমূলে আরও সুসংগঠিত করতে সিরাজগঞ্জ-৬ শাহজাদপুর আসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দল আমাকে সুযোগ দিলে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ভিশন-২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শাহজাদপুরকে তিলোত্তমা শহরে পরিণত করবো।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতেই সাজ্জাদ হায়দার লিটন দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগঞ্জের পাড়া-মহল্লায়, হাট-বাজারে গণসংযোগ করে চলেছেন। এ সময় তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ব্যাপক উপস্থিতি, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সমর্থন লাভ করছেন এই জয়প্রিয় জননেতা। বিশেষ করে নির্বাচনী এলাকায় সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে উঠান বৈঠক, মত বিনিময় সভা, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্বলিত লিফলেট ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় শীর্ষে রয়েছেন তিনি।

ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন একজন সুবক্তা, উচ্চ শিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবেই সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। বিশেষ করে তাঁর বিনয়ী আচরণ দ্বারা নেতাকর্মীসহ ভোটারদের কাছে টানতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য জনসাধারণ তার উপরে দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে শুরু করেছেন।

বহুগুণে গুণান্বিত মানবিক যুবলীগ নেতা ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন রাশিয়া বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সেক্রেটারী, ভারত-বাংলাদেশ ফেন্ড্রশিপ সেন্টারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ মিল্পভিটার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মিল্কভিটার সাবেক পরিচালক ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, এলাকার উন্নয়নে এবং কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে ড. লিটনের বিকল্প নেই। ড. লিটনের পরিবার ও তাঁর নিজের রাজনৈতিক অবদান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মী বান্ধব রাজনীতি, সর্বপোরি জনসেবার মানসিকতাই তাঁকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রাখছে।

ড. লিটনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মোহনের হাত ধরে যেমন শাহজাদপুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক পরিবর্তন এসেছে, তেমনি ড. লিটনকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা গেলেও এলাকায় যুগান্তকারী অনেক পরিবর্তন আসবে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং সরকার ও আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে ভালো যোগাযোগ থাকায় তার পক্ষেই কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব। শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এমনটা জানিয়েছেন।

শাহজাদপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৬ সংসদীয় আসন। শাহজাদপুর উপজেলার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হলো দুগ্ধ এবং তাঁত শিল্প। করতোয়া নদীর পশ্চিমে দুগ্ধ শিল্প আর পূর্ব দিকে তাঁত শিল্পের প্রাধান্য। শাহজাদপুরে এই দুইটি শিল্পের বিকাশে যিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি হলেন ড. লিটনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মোহন। তিনি শাহজাদপুরের পোঁতাজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদের দুইবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালেই পোঁতাজিয়া ইউনিয়নে স্থাপন হয় বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্কভিটা) এর সবচেয়ে বড় কারখানা।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মোহনের হাত ধরে শাহজাদপুরে তাঁত শিল্পেরও বিকাশ হয়। তিনি পাকিস্তান আমলে তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হন। তৎকালীন ভারতের বোম্বে (মুম্বাই) থেকে ডিজাইন নিয়ে এসে শাহজাদপুরে নিজের কারখানায় কাপড় উৎপাদন করতেন মোহন। তিনি সে সময়ে শাহজাদপুর বণিক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একদিকে যেমন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থনৈতিকভাবেও সহযোগিতা করতেন।

জানা যায়, আব্দুল মতিন মোহনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর সন্তান সাজ্জাদ হায়দার লিটনও শাহজাদপুরের মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করে চলেছেন। তার ঐকান্তিক চেষ্টায় শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তাঁর বাবা আব্দুল মতিন মোহনের নামে রাস্তা, ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে স্কুল, ঈদগাহ, কবরস্থান নির্মাণ করেছেন।

জানা গেছে, গত দুই দশক ধরে জাতীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন সাজ্জাদ হায়দার লিটন। তিনি গত ১৯ বছর ধরে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। বর্তমানে তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। এর আগে ২০১২ সালে যুবলীগের কমিটি গঠন হলে সাজ্জাদ হায়দার লিটন আন্তর্জাতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এরও আগে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজমের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন ড. লিটন। তিনি ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পাদক হওয়ার পরে সারা বিশ্বে যুবলীগের কর্মকাণ্ডে গতির সঞ্চার হয়। তিনি বিভিন্ন দেশ ঘুরে যুবলীগকে সংগঠিত করেন।

২০০৭ সালের আলোচিত এক এগারোর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সাহসী ভূমিকা রাখেন সাজ্জাদ হায়দার লিটন। সেসময়ের বাস্তবতায় অনেক নেতা যখন গা ঢাকা দেন তখন তিনি রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারামুক্তির আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে ছিলেন। ঝুঁকি নিয়ে ও তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাজ্জাদ হায়দার লিটন ধানমণ্ডির সুধাসদনে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সাজ্জাদ হায়দার লিটন আওয়ামীলীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। পরবর্তীতে মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে শাহজাদপুরের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে চোষে বেড়িয়েছেন। এমনকি উপজেলা নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার ইউপি নির্বাচনে তিনি দলের মনোনীত প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করতে মাঠে থেকেছেন সবসময়। নিজের অর্থ ব্যয়ে করে নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোট যুদ্ধে মাঠে-ময়দানে সরব থেকেছেন। একই সঙ্গে বিগত বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী চক্রান্ত ও অপশক্তির বিরুদ্ধে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেতাকর্মীদের সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়ে মাঠে রেখেছেন।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. লিটনের পরিবার ও তাঁর নিজের রাজনৈতিক অবদান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মী বান্ধব রাজনীতি, সর্বোপরি জনসেবার মানসিকতাই তাঁকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রাখছে।

ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এলাকার উন্নয়নের জন্য নিঃশর্তভাবে কাজ করব। রাষ্ট্রের যত সুবিধা আছে, সবকিছু দিয়ে এলাকার উন্নয়নের ইতিহাস বদলে দিতে চাই। সরকারের সহযেগিতার পাশাপাশি বিদেশী সহযোতিায় শাহজাদপুরকে মডেল উপজেলা গড়ে তুলতে চাই।

লিটন আরও বলেন, আমি এমপি নমিনেশন নেওয়ার বহু আগে থেকে শাহজাদপুরের মানুষের জন্য কাজ করি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। আমার আদর্শ বঙ্গবন্ধু, নেতৃত্ব শেখ হাসিনা। মনোনয়নপত্র কিনেছি এলাকার উন্নয়ন ও জনগণের পাশে দাঁড়াতে। আশা করি দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে ইনশাল্লাহ।